মোবারক হোসেন:
চারদিকে মৃত্যুর মিছিল। প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্বজন ও পরিচিতজন না ফেরার দেশে চলে যাচ্ছেন। অনেকেই জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে গুনছেন মৃত্যুর প্রহর। অবস্থা এমন যে, কোনো কোনো দিন দুই তিন জনের জানাজা পড়তে হয়। ব্যস্ততার কারণে অনেক স্বজনের শেষ বিদায় বা জানাজায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয়না। কখন কার ডাক আসে বলা যায়না। মৃত্যুর এক মুহুর্ত গ্যারান্টি নেই। এরপরও আমরা বেহুশ।
নীতি আদর্শ ও ধর্মীয় মুল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে চলছে ধনী হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগীতা। জনগণের অর্থ সম্পদ লুটেপুটে এই প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হতে মরিয়া আমলা-কামলা থেকে শুরু করে দেশের কুলি মজুররা। এই পথে হাটছে মানবতার ফেরিওয়ালা দাবিদাররাও।নীতিনৈতিকতা এখন তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। বিলুপ্তির পথে সামাজিক ও ধর্মীয় মুল্যবোধ। ক্ষমতা আর টাকার জন্য এমন কোনো জঘন্য কাজ নাই যা দেশে হচ্ছেনা। একটু স্বার্থের জন্য ছেলে তার পিতাকে, বাবা তার সন্তানকে, ভাই তার ভাইকে, স্ত্রী তার স্বামীকে, স্বামী তার স্ত্রীকে হত্যা করতেও দ্বীধা করছে না। ক্রমেই বাড়ছে সামাজিক অবক্ষয়। নষ্ট হচ্ছে শৃঙ্খলা। অস্থির হয়ে উঠছে গোটা সমাজ ব্যবস্থা। এই সমাজ ও রাস্ট্র ব্যবস্থা এতটাই কলুষিত, যে স্বেচ্ছায় জীবনাবাসন যদি মহাপাপ না হতো তাহলে, বিবেকবোধ সম্পন্ন মানুষ তাদের ধনসম্পদ রাস্ট্রের আমলা-কামলা ও মানবতার ফেরিওয়ালা দাবিদার ব্যক্তিদের দান করে এই পৃথিবীকে গুডবাই জানিয়ে পরকালে পারি জমাতো।
সব সময় আল্লাহর কাছে কায়মনে প্রার্থনা করি, কখনো যেন অবৈধ কোনো টাকা-পয়সা পকেটে না আসে। ঋণমুক্ত অবস্থায় ঈমানের সহিত যেন মৃত্যু হয়। কারণ, যে যত বড় গুনাহগার ও পাপী বান্দা হোক, তওবা করলে আল্লাহ তার সকল পাপ ক্ষমা করেদেন। কিন্তু কেউ যদি কারও কাছে দেনা পাওনা বা ঋনগ্রস্থ হয় ও কোনো বান্দার হক আত্মসাৎ, ঘুষ-দুর্নীতি এবং জুলুম নির্যাতন করে টাকা পয়সা কামাই করে, তাহলে আল্লাহ কখনো তাকে মাফ করবেন না। যতক্ষন হকদার বান্দার পাওনা পরিশোধ না করা হবে। অথবা পাওনাদার ব্যক্তি ক্ষামা না করবেন।
আমার ধারদেনা ও বাকিতে কোনো কিছু ক্রয় করার অভ্যাস নাই বললেই চলে। অনেক সময় কৌশলত কারণে বাকিতে কিছু কেনাকাটা করলেও সেই টাকা যথা সময়ে পরিশোধ করে দেই। অন্যথায় পণ্য ফেরত দেই। এরপরও আমার কাছে কোনো ব্যক্তি, সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধব, হাট-বাজার, মার্কেট ও পাড়া মহল্লার ছোটখাটো দোকানদার টাকা-পয়সা পান, তাহলে সংকোচবোধ না করে চেয়ে নিবেন। টাকার পরিমান যতই কম হোক সেটা আপনাদের অধিকার। চাহিবা মাত্রই তা পরিশোধ করে দিব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ না করুক যদি হঠাৎ মারা যাই, তাহলে আমার পরিবার ও স্বজনের সাথে যোগাযোগ করবেন। তারা দিয়ে দিবেন। অন্যথায় ক্ষমা করে দিবেন। কারণ ক্ষমাই মহত্বের লক্ষন।
মানুষ মাত্রই কেউ ভুলত্রুটির উর্ধ্বে নয়, পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে আমার আচার-ব্যবহার, কথাবার্তা ও লেখালেখিতে কেউ যদি দু:খ-কষ্ট পান বা ক্ষতিগ্রস্থ হন, তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। পরম করুনাময় আল্লাহর কাছে সকল অন্ধকার, পাপ পঙ্কিলতামুক্ত সবার সুখী সুন্দর জীবন প্রত্যাশা করছি।