রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৩৮ অপরাহ্ন

এশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা নয়: ন্যাটোকে সতর্কবার্তা চীনের

জনশক্তি ডেক্স:
  • আপডেট সময়: বুধবার, ১২ জুলাই, ২০২৩ ৬:০৫ pm

আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে চীনকে কোনঠাসা করতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অ্যালায়েন্স (ন্যাটো) যদি এশিয়া অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে, সেক্ষেত্রে শক্তভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেইজিং।

ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চীনা দূতাবাস থেকে দেওয়া এক বিৃবতিতে বলা হয়েছে, ন্যাটো যদি চীনের জাতীয় স্বার্থ এবং আইনানুগ অধিকার খর্ব করার কোনো পরিকল্পনা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়, সেক্ষেত্রে তার দৃঢ় জবাব দেবে বেইজিং।

ইউরোপের বাল্টিক অঞ্চলের দেশ লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলিনাসে গত ১০ এবং ১১ জুলাই সম্মেলন ছিল ন্যাটোর। সম্মেলন শেষে জোটের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর নেতারা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চীনের বর্তমান অবস্থান এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে ন্যাটোর করণীয় সম্পর্কিত একটি যৌথ বিবৃতি দেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক কৌশল ব্যবহারের মাধ্যমে চীন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে তার প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে; কিন্তু এর মাধ্যমে আসলে বেইজিং কী চায়— তা এখনও আমাদের কাছে অস্পষ্ট।’

‘গত কয়েক বছর ধরে এশিয়া প্রশান্ত অঞ্চলের দেশগুলো ইতোমধ্যেই চীনের উচ্চাকাঙ্খী, বিদ্বেষপরায়ণ ও জবরদস্তিমূলক বিভিন্ন নীতির শিকারে পরিণত হচ্ছে এবং চীনের এই প্রভাব নিয়ন্ত্রণে যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে তা এক সময় জোটের ভবিষ্যত ও নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক হয়ে উঠবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে চীন এবং রাশিয়া নিজেদের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং এই দুই দেশের মিত্রতা অদূর ভবিষ্যতে আইনভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থাকে গভীর সংকটে ফেলবে।

‘দুই রাষ্ট্রের গভীর মিত্রতা যে ইতোমধ্যেই আইনভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থাকে ঝুঁকিতে ফেলেছে, তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ— নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালোনোর জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা কোনো নিন্দা প্রস্তাবে এখন পর্যন্ত ভোট দেয়নি চীন।’

ন্যাটোর এই বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা পরই পাল্টা বিবৃতি দেয় ইইউর চীনা দূতাবাস। সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ন্যাটো এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলে প্রবেশ করতে চাইছে। আমরা দৃঢ়ভাবে তার আপত্তি জানিয়ে বলতে চাই— যদি চীনের জাতীয় স্বার্থ ও বৈধ অধিকারসমূহে হস্তক্ষেপের কোনো চেষ্টা কেউ করে, সেক্ষেত্রে শক্তভাবে তা প্রতিরোধ করতে বেইজিং প্রস্তুত।’

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই সামরিক জোটের একমাত্র এশীয় সদস্যের নাম তুরস্ক। তবে সম্মেলনে জোটের নিয়মিত সদস্যরাষ্ট্রগুলো ছাড়াও এশিয়া ও এশিয়া প্রশান্ত অঞ্চলের কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এরা হলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়োল, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ এবং নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স। প্রতিটি দেশের সঙ্গেই সমুদ্রসীমাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দ্বন্দ্ব রয়েছে বেইজিংয়ের।

এর আগে গত মে মাসে টোকিওতে ন্যাটোর মৈত্রী কার্যালয় খোলার জন্য জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু কিশিদা তাতে সায় দেননি।

তবে সদ্য শেষ হওয়া ভিলিনাস সম্মেলনে এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলের যে চারটি দেশ উপস্থিত ছিল— প্রত্যেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনকে কয়েক দফায় সামরিক সহায়তা পাঠিয়েছে।

সূত্র : আলজাজিরা

শেয়ার করুন:

আরো সংবাদ
© All rights reserved © janashokti

Developer Design Host BD