অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে দুর্নীতি বন্ধে আমরা কাজ করছি। বড় প্রকল্পে নকশা কেন সংশোধন করা হলো এটা আমরা খতিয়ে দেখব। ভবিষ্যতে যাতে ভুল না করি এটা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করব।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি ভবনে তিনি এ কথা বলেন।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নেয়া প্রকল্প কিংবা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) যাওয়ার প্রক্রিয়াধীন এমন প্রকল্প আবার যাচাই-বাছাই করা হবে। এসব প্রকল্প দ্রুত মূল্যায়ন করা হবে। প্রয়োজনে ছাঁটাই করা হবে।
তিনি বলেন, চলমান প্রকল্প হলেই রেখে দিতে হবে, তা নয়। লাভ হবে না, এমন প্রকল্প বাদ দেওয়া ভালো। এমন অনেক প্রকল্প আছে, যেগুলো খুবই অপচয়মূলক। সড়কসহ বেশ কিছু অবকাঠামো প্রকল্পে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি খরচ হয়েছে বলে দেখা গেছে। অনেক সময় ঠিকাদারদের স্বার্থ দেখা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা প্রকল্পগুলো দ্রুত মূল্যায়ন করে যে প্রকল্পে লাভ হবে না, সেটি বাদ দিতে হবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, সরকারের অনেক বড় দুর্নীতি আছে; যেটার নকশা পরিবর্তন করতে হয়, ব্যয় বাড়াতে হয়, এগুলো বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে। দেশি ঠিকাদারের রাজনৈতিক প্রভাব আছে। এটা যাতে না হয়। আমরা যেভাবে এগোচ্ছি, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরো বলেন, মেগাপ্রকল্প বা বড় প্রকল্পের বিষয়ে কোনো নীতি নেই। এগুলো নির্ভর করবে কোন পর্যায়ে আছে। প্রকল্পের বিষয়ে সময় একটা বড় বিষয়। এটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এগুলো নিয়ে এগোবে নাকি এগোবে না। কিছু খরচ হয়ে গেলেই প্রকল্প শেষ করতে হবে, বিষয়টা এমন নয়। যৌক্তিক অর্থনৈতিক বিবেচনা হলো, কত খরচ করেছি তা নয়, বাকি কাজ করতে কত লাগবে সেটা বড় বিষয়। পুরো প্রকল্প থেকে কত সুবিধা পাব এটাই বিষয়। প্রকল্পে লাভ-ক্ষতি দেখতে হবে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি এখন অনেক বেশি। আমাদের খরচ কমাতে হবে। প্রকল্প গ্রহণে সেসব বিবেচনা করতে হবে। এখন অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা বড় বিষয়। আমাদের অর্থনীতির মাপকাঠি জিডিপি। অথচ কর্মসংস্থান বাড়ানো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, জিডিপি বাড়ানো জরুরি নয়।’
এদিন সভায় পরিকল্পনা কমিশনের অন্যান্য সদস্য এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।