জসিম উদ্দিন সরকার, মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বাড়ির সীমানা নিয়ে দ্বন্দের জেরে একই পরিবারের ৪ জনকে পিটিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গত ১২ নভেম্বর রোববার বেলা অনুমানিক ৪টার দিকে সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের মেদুলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে । হামলাকারীরা হচ্ছেন সামাদ (৪২) , আজাদ (৪০), আছর (৩৮), কাউসার (২০), রাজিয়া বেগম (৫৮), ফুলজান (৩৬) ও পান্না আক্তার (২৬)। আহত পরিবারের পক্ষে হযরত আলী বাদী হয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সিংগাইর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর ১৬।
মামলার এজাহার ও বাদী পরিবার সূত্রে জানা গেছে , বাড়ির সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ হামলাকারীদের সাথে বিরোধ চলছিল। ইতিপূর্বে কয়েক দফায় তর্ক বিতর্কও হয়। গত ১২ নভেম্বর রোববার বেলা চারটার দিকে বিবাদীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সুযোগ বুঝে সহসা বাদীর বাড়ির আঙ্গিনায় ঢুকে রামদা, হাতুড়ি, লোহার মোটা পাইপ ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে এলোপাথারিভাবে হামলা চালায়। এতে ওই পরিবারের ৪ জন গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
প্রতক্ষদর্শী ও হামলার শিকার ওমর ফারুক রতন বলেন, আমাদের বাড়িতে পূর্ব ভিটায় নতুন একখানা ঘর নির্মাণ নিয়ে সবাই ব্যস্ত ছিলাম। আমার ছোট ভাই ফরহাদ (২৫) কে বাড়ির আঙ্গিনায় একা পেয়ে বিবাদীরা সবাই তার উপর ঝাঁপিয়ে পরে সারা শরীরে বেধড়ক মারপিট করে। তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আমি তাকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও ওরা সবাই পিটিয়ে আমার হাত ভেংগে দেয়। আমার চিৎকার শুনে আমার মা রেহেনা বেগম (৫৫) ও বেড়াতে আসা ছোট ভাইয়ের শ্যালক তৌসিফ আমিন খান এগিয়ে আসলে তাদেরকেও অমানবিকভাবে হামলা করে। সন্ত্রাসীদের হামলায় আমার মায়ের মাথার খুলি ফেঁটে গিয়েছে এবং তৌসিফের চোখের রেটিনা নষ্ট হবার পথে। তাদের দুজনের অবস্থা বেশ আশংকাজনক।
বাদী পরিবার আরও জানায়, অভিযুক্ত সামাদ ইউরোপ চাকরি করে মোটা টাকা কামাই করেন। দেশের আইন ও পুলিশ প্রশাসনসহ এলাকার কাউকে সে তোয়াক্কা না করে নিজ ভাইদের লেলিয়ে দেয় অন্যদের ওপর হামলা চালাতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বছর খানেক আগে আপন চাচা আক্কাস আলীকে হাতুড়ি পেটা করার অভিযোগ পাওয়া যায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে। প্রায় ৫ বছর আগে একই এলাকার আব্বাস আলী নামের এক কৃষককে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে এখনও মামলা চলমান রয়েছে বিবাদীদের একজন আছরের বিরুদ্ধে। আছরের পরকীয়া দেখে ফেলায় কাল হয়েছিল নিরীহ আব্বাস আলীর। এছাড়াও প্রায়শয় কাউকে না কাউকে মারধরের শিকার হতে হয় এদের হাতে।
হামলার বিষয়ে কথা কথা বলতে গত ১৫ নভেম্বর বুধবার বেলা ১২ টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে বিবাদীদের কাউকে বাড়িতে পায় যায়নি।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা নেয়া হয়েছে। তদন্তপূর্বক অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।