আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তথাকথিত আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েও বিএনপি তার চিরাচরিত নির্গল মিথ্যাচারের ধারা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি তথাকথিত রাজনৈতিক কর্মসূচি ও অবরোধের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি বিএনপির গণতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন করার শক্তি ও সামর্থ্য নেই বলেই তারা বরাবরের মতো অগ্নিসন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।
বুধবার (৮ নভেম্বর) দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের ন্যায় অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্ণয় আগুনের লেলিহান শিখার পোড়াচ্ছে সারা দেশ। মেতে উঠেছে নির্বিচারে ভাঙচুর ও সহিংসতায়। অগ্নিসন্ত্রাস, সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করা, মানুষ হত্যা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মতো ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি তথাকথিত সরকার পতনের আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের অন্তরের জ্বালা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্যর্থতার সেই আগুনে তারা বাংলার জনগণের আগামীর সম্ভবনাকে পুড়িয়ে ছাই করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের অগ্নিসন্ত্রাস থেকে জীবন্ত ও ঘুমন্ত নারী-শিশু কেউই রেহাই পাচ্ছে না। ভোরে নেমে বিএনপি লাশের রাজনীতি করছে। এ দেশের রাজনীতিতে মানুষ পুড়িয়ে মারার যে পৈশাচিকতার প্রচলন বিএনপি করেছে, তা সত্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিপন্থী। সরকারের দায়িত্ব হলো জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। জনগণের নিরাপত্তা সুরক্ষায় সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি নেতারা ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের নামে লাগাতার মিথ্যা অপপ্রচার ও অরাজকতা সৃষ্টি করছে এবং তাদের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাস সৃষ্টির নির্দেশনা দিচ্ছে। একই সঙ্গে বিএনপি নেতারা তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করছেন। বিএনপির সন্ত্রাসী ক্যাডারবাহিনীর যারা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, সন্ত্রাস ও নাশকতা চালাচ্ছে, জনগণের জানমালের উপর হামলা করছে, তারা নিজেরাই গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে থাকয়ে। অথচ বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে বরাবরের মতো মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী রাজনৈতিক নেতাকর্মী বিবেচনায় নয় কেবলমাত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদেরই গ্রেফতার করছে। কোনো সন্ত্রাসী আত্মগোপনে থাকলে তার দায় সরকারের উপর চাপানো যায় না।
আওয়ামী লীগ কখনো গুম, খুন, অগ্নিসন্ত্রাস ও বিরোধী দল দমনের রাজনীতি করে না। গুম, খুন, সন্ত্রাসের রাজনীতি হলো বিএনপির মজ্জাগত আদর্শ। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার শাসক জিয়াউর রহমান এদেশে গুম ও খুনের অপরাজনীতির প্রচলন করেছিল। তৎকালীন সময়ে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজ বাবুকে গুমের মধ্য দিয়ে এই ধারার সূচনা করে বিএনপি। সামরিক স্বৈরশাসক জিয়া ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর সময়ের দেড় শতাধিক আওয়ামী লীগ দলীয় জাতীয় সংসদ সদস্যদেরকে জেলে বন্দি রেখে নির্বাচন আয়োজন করেছিল। অর্ধশতাধিক সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের প্রার্থিতা বাতিল করে প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০১-২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট আমলে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল এবং অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী অপারেশন ক্লিনহার্ট এর মাধ্যমে শত শত মানুষকে হত্যা করেছিল।
কাদের বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ো গণ সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর। আওয়ামী লীগের শক্তির একমাত্র উৎস জনগণ। জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির যে কোনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত এবং সন্ত্রাস, নাশকতা, নৈরাজ্য ও গণবিরোধী কর্মকালের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আমরা বিশ্বাস করি, সফল রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের জীবনমানের উচ্চারন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন-সমৃদ্ধির চলমান অগ্রগতিকে যে কোনো মুল্যে সমুন্নত রাখবে বাংলার জনগণ।