জসিম উদ্দীন সরকার, লেবানন: লেবাননে ডলার এর মূল্যবৃদ্ধি, এরমধ্যে করোনা ভাইরাসের হানায় কর্মহীন লক্ষাধীক প্রবাসী বাংলাদেশী। একদিকে কর্মহীনতা হয়ে পড়া, অন্যদিকে অর্থের অভাবে খাদ্য সংকটে অনিশ্চিয়তায় দিন কাটছে লেবাননে বসবাসত বাংলাদেশী প্রবাসীদের। সব মিলিয়ে দিশেহারা তারা।
বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের দেয়া লেবানন প্রবাসীদের জন্য অনুদান পেতে শুরু করলেও তা এখনো পৌছেনি অনেক এলাকায়। যদিও দূতাবাস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দূততম সময় প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রান পৌছাতে। ত্রানের পরিমান অল্প হলেও এই সময়ে এতেই তুষ্ট অসহায়, অর্ধাহারী-অনাহারী প্রবাসীরা। অন্তত কিছুদিন চলার ব্যবস্থাতো হল। এমনটি জানিয়েছেন অনেক প্রবাসী।
জীবনের ঝুকি নিয়ে এসকল প্রবাসীদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেয়ার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দূতাবাস কর্মকর্তাবৃন্দ, কিন্তু লকডাউনের কারণে লেবাননের বিভিন্ন প্রান্তে প্রবাসীদের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌছেনো বিঘ্ন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।
অনেক প্রবাসীর মা বাবা, স্ত্রী সন্তান, ভাই বোন অপেক্ষার প্রহর গুনছে বিদেশ থেকে কখন তাদের কাংখিত জন্য টাকা পাঠাবে। যে পরিবার গুলো প্রতিমাসে টাকা না পাঠালে সংসারের চাকা ঘুড়েনা। তাদের সেই পরিবার গুলোকে এই সময়ে শান্তনাও দিতে পারছেনা লেবানন প্রবাসী কর্মীরা।
লেবাননে ডলারের দাম বেড়েছে তিনগুণ, কিন্তু লেবানন ব্যাংক এর ডলারের মূল্য এখনো আগের অবস্থায় রয়েছে। ফলে এখনো মালিকরা সরকারী হিসেবেই বেতন পরিশোধ করছে। এতে অল্প আয়ের প্রবাসীরা পাওনা বেতন দিয়ে ঘর ভাড়া পরিশোধ করতেই হিমশিম খাচ্ছে। সব মিলিয়ে খেয়ে দেয়ে বেঁচে থাকাই এখন লেবানন প্রবাসীদের বড় সংগ্রাম।
প্রতি বছর রমজান এলে বৈরুত সহ বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রমজানের আমেজ লেগে থাকত। কিন্ত্য বর্তমান চিত্রটা ভিন্ন, চারিদিকে শুধু সুনসান নীরবতা আর হতাশা ।
লেবাননের অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের কোন পথ দেখা যাচ্ছেনা। ধীরে ধীরে অবনতি হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যেও সরকারী বিরোধী স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেছে লেবানিজ হাজারো জনতা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পত্র সহ সকল জিনিস পত্রের দাম হাতের নাগালের বাহিরে চলে যাওয়ায় অনেক কষ্টে দিন যাপন করছে হাজার হাজার লেবানিজরাও।
এত অন্ধকারের মাঝে একটু আশার আলো দেখার অপেক্ষায় প্রবাসীরা। তাদের প্রত্যাশা আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসবে লেবানন।