শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৯:১৮ অপরাহ্ন

করোনায় আক্রান্ত সোয়া দুই লাখ, ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিশ্ব

জনশক্তি ডেক্স:
  • আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ১৯ মার্চ, ২০২০ ৬:৫৬ pm

বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দুই লাখ এবং মৃত্যুর সংখ্যা নয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দ্রুত ছড়ানোয় ও বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটানোয় ভাইরাসটিকে মানবতার শত্রু বলে আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটি এখন ইউরোপ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

ইতালির পাশাপাশি স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে ৯০০ জন এবং ইতালিতে ৪৭৫ জন ভাইরাসটিতে মারা গেছে।

এদিকে, দেশের ভেতরে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও বিদেশ ফেরতদের মাধ্যমে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরে আক্রান্তেও সংখ্যা বাড়ছে।

গত বছর ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান থেকে প্রাদুর্ভাব শুরু হয়ে এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৭৬টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। খবর বিবিসি, রয়টার্স, এনডিটিভি, আনন্দবাজার, ইন্ডিয়া টুডে, এপি, সিএনএন, গার্ডিয়ান, আল জাজিরা ও ওয়ার্ল্ড ওমিটার।
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওমিটারস ডট ইনফোর হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় নয় হাজার ৩০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ২৭ হাজার ৬৮৭ জন। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছে ৮৫ হাজার ৯৭১ জন। উৎপত্তিস্থল চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৯২৮। এর মধ্যে তিন হাজার ২৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬৮ হাজার ৬৮৮ জন। ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৭১৩।

এর মধ্যে দুই হাজার ৯৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় উপরের সারিতে থাকা অন্য দেশগুলোর মধ্যে ইরানে ১২৮৪, স্পেনে ৬৭৬, ফ্রান্সে ২৬৪, যুক্তরাষ্ট্রে ১৫৫, যুক্তরাজ্যে ১০৮, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৯১, সুইজারল্যান্ডে ৩৬, জার্মানিতে ৩৩, ইন্দোনেশিয়ায় ২৫, ফিলিপাইনে ১৭, ইরাকে ১২, কানাডায় ৯, ভারতে চার, পাকিস্তানে দুই ও বাংলাদেশে একজন মারা গেছেন।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশ স্কুল, কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং গণপরিবহন ও ধর্মীয় উপাসনালয়সহ যেসব স্থানে লোকসমাগম বেশি থাকে সেগুলোর ওপর নানা ধরনের বিধিনিষেধ দিয়েছে।

বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশাধিকারের পাশাপাশি একের পর এক সীমান্তও বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। করোনা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর আরও বেশি তথ্য প্রকাশ প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
একদিনে ইতালিতে ৪৭৫ জনের মৃত্যু : করোনায় একদিনে ইতালিতে ৪৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা তিন হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। দেশটির ভাইরাস উপদ্রুত লম্বার্দি অঞ্চলে বুধবার ৩১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৭১৩ জন।

যুক্তরাজ্য পরিস্থিতি : করোনা সংক্রমণ রুখতে যুক্তরাজ্য সব স্কুল, কলেজ ও নার্সারি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে, করোনার বিস্তার রোধে সরকার সময়মতো পদক্ষেপ নেয়নি বলে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে বরিস জনসনের সরকার।

বুধবার যুক্তরাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী গ্যাভিন উইলিয়ামসন পার্লামেন্টে বলেন, সব স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিলেও স্বাস্থ্য খাতের মতো প্রয়োজনীয় খাতের কর্মীদের সন্তানদের জন্য কিছু স্কুল খোলা রাখা হবে। আমরা এখন এমন পর্যায়ে আছি, যেখানে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার গতি আমাদের ধারণার চেয়েও বেশি হচ্ছে। বুধবার পর্যন্ত দেশটিতে দুই হাজার ৬২৬ জন শনাক্ত হয়েছে। ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি : ট্রাম্প প্রশাসনের হাঁকডাকের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৮১৪ জন, আর মারা গেছেন ১৫৫ জন।

এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২২৫ জন এবং ১৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, ফ্লোরিডার এক প্রতিনিধিসহ মার্কিন কংগ্রেসের দুই আইনপ্রণেতা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

কংগ্রেসম্যান মারিও দিয়াজ-বালাস-এর অফিস করোনা টেস্টে পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পরপরই বুধবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানায়। মিয়ামি সিটি মেয়র ফ্রান্সিস সুয়ারেজ গত সপ্তাহে করোনা টেস্টে পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর রিপাবলিকান সদস্য কংগ্রেসম্যান মারিও দিয়াজ এ করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর জানালেন। তারা উভয়েই তাদের বাসায় সিডিসি বিশেষ সেলফ আইসোলেশন নির্দেশনা অনুসরণ করছেন। গত সপ্তাহে মারিও দিয়াজ-বালাস সহকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করায় অপর রিপাবলিকান সদস্য স্টিভ স্যালাইস সেলফ কোয়ারেন্টিনে গেছেন।

এদিকে, মার্কিন নাগরিকদের বিনা মূল্যে করোনাভাইরাস টেস্ট এবং ভুক্তভোগী পরিবার ও কর্মীদের সহযোগিতার বিষয়ে ট্রাম্প সরকারের একটি বিলের অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন সিনেট।

করোনা মোকাবেলায় প্রায় দু’মাসের জন্য সব ধরনের জনসমাগম বা অনুষ্ঠান বাতিলের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)। ইতিমধ্যে বেশকিছু রাজ্য ক্যাফে, বার ও রেস্তোরাঁয় জনসমাগম সীমিত করা হয়েছে। এ ছাড়া, অন্তত ৩২টি রাজ্যের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

করোনা মানবতার শত্রু : বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়ানোর দিনে ভাইরাসটিকে মানবতার শত্রু বলে আখ্যা দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আডানম গেব্রিয়াসুস।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভাইরাসটি আমাদের ওপর নজিরবিহীন হুমকি তৈরি করেছে। বিশ্বের সব দেশকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ সাধারণ শত্রুকে পরাজিত করার আহ্বান জানান তিনি।

ইউরোপ ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার দেশগুলোয় তীব্রভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর ভাইরাসটি এখন সাব-সাহারা আফ্রিকার ওপর নতুন হুমকি তৈরি করেছে।
এ অঞ্চলে আক্রান্ত ২৩৩ জন শনাক্ত হয়েছে ও মারা গেছে চারজন। তবে হুশিয়ারি দিয়ে ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রোস বলেন, পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যেতে পারে।

তিনি বলেন, অন্য দেশগুলোয় আমরা দেখেছি, নির্দিষ্ট একটি সীমার পর ভাইরাসটি কীভাবে দ্রুত ছড়ায়। ফলে আফ্রিকার জন্য সবচেয়ে ভালো পরামর্শ হল- সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নেয়া।

টেড্রোস আডানম জানান, প্রতিদিন বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাদের করণীয় ও অগ্রাধিকার নির্ধারণে সহায়তা দিচ্ছেন তিনি।

তিনি বলেন, মনে করবেন না, আপনার জনগোষ্ঠী আক্রান্ত হবে না। আক্রান্ত হবে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিন। সন্দেহভাজন প্রতিটি রোগীকে পরীক্ষার আওতায় আনার পরামর্শ দেন তিনি।

যেসব দেশে আক্রান্তের সংখ্যা কমানো সম্ভব হচ্ছে না, সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ কমিয়ে মহামারীকে আরও বেশি ব্যবস্থাপনাযোগ্য করে তোলার আহ্বান জানান ডব্লিউএইচও প্রধান।

তিনি বলেন, সংক্রমণ ঠেকাতে খেলাধুলার আয়োজন, কনসার্ট বা অন্য যে কোনো বড় আয়োজন বাতিল করে মানুষের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।

করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ঘটনা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর আরও বেশি তথ্য প্রকাশ প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বুধবার ভিডিও কনফারেন্সে সংস্থাটির ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার আঞ্চলিক পরিচালক আহমেদ আল মানধারি বলেন, ভাইরাসটি মোকাবেলায় এখন পর্যন্ত এ অঞ্চলের দেশগুলোর নেয়া পদক্ষেপ যথাযথ নয়। তিনি আরও বলেন, ডব্লিউএইচও চায় নজরদারি শক্তিশালী করা হোক, পরীক্ষার বিস্তৃতি বাড়ানো হোক এবং আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের পরিবারকে সহায়তা দেয়া হোক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনার ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

বিদেশ ফেরতদের মাধ্যমে চীন ও দ. কোরিয়ায় ছড়াচ্ছে : দেশের ভেতরে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও বিদেশ ফেরতদের মাধ্যমে কয়েকটি দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বাইরে থেকে দেশে প্রবেশ করা মানুষের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও সিঙ্গাপুরের মতো এশিয়ান দেশগুলোয় দ্বিতীয় দফায় করোনা ছড়িয়ে পড়ছে।

প্রথম প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়া চীনে জানুয়ারির পর থেকে মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো অভ্যন্তরীণভাবে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। তবে সম্প্রতি চীনে ফিরে এসেছেন এমন মানুষের মধ্যে ৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত করার তথ্য জানিয়েছে চীন।

দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫২ জনে। তবে তাদের মধ্যে কতজন ভাইরাস বিদেশ থেকে বহন করে নিয়ে এসেছেন, তা পরিষ্কার নয়। দেশটির দেগু-র একটি নার্সিং হোমে ৭৪ জন রোগীর মধ্যে ভাইরাস শনাক্ত করা গেছে।

বুধবার সিঙ্গাপুরে নতুন ৪৭ জনের মধ্যে সংক্রমণের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ৩৩ জনের দেহে বাইরে থেকে ভাইরাস এসেছে। ৩৩ জনের মধ্যে ৩০ জনই বিদেশে সংক্রমিত হওয়ার পর দেশটিতে প্রবেশ করেন।

এদিকে, প্রায় তিন মাস আগে করোনার প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর বুধবার প্রথমবারের মতো কোনো নতুন রোগী পাওয়া যায়নি চীনের হুবেই প্রদেশে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বলছে, হুবেইয়ের বাইরে দেশের অন্যসব অঞ্চলে বুধবার সব মিলিয়ে ৩৪ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে এবং তাদের সবাই বিদেশ থেকে ভাইরাস নিয়ে এসেছেন। এদিন চীনের মূল ভূখণ্ডে স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত কোনো নতুন রোগী পাওয়া যায়নি।

বিদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের : বিদেশিদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। শুক্রবার থেকে নতুন এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, শুক্রবার থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। অপরদিকে, নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। তবে এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবেন না দেশ দুটির স্থায়ী নাগরিক, স্থায়ী বাসিন্দা অথবা তাদের পরিবারের সদস্যরা।

মরিসন এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমরা লড়াই করে যাচ্ছি যেন অস্ট্রেলিয়ার লোকজন আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত ৬৩৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে নিউজিল্যান্ডে এখন পর্যন্ত কারও মারা যাওয়ার খবর পাওয়া না গেলেও ২৮ জন আক্রান্ত হয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ করোনা : করোনার মহামারী মোকাবেলা করতে গিয়ে জার্মানি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল।

জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে তিনি নাগরিকদের অবরুদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পরিস্থিতি মারাত্মক। একে মারাত্মকভাবেই নিন। জার্মানি পুনরেকত্রীকরণের পর, না, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আমাদের দেশের সমন্বিত সংহতির প্রতি আর কোনো কিছুই এমন মারাত্মক চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, আমি সত্যিকার অর্থে বিশ্বাস করি, আমরা এই কাজে (করোনা মোকাবেলায়) সফল হতে পারব, যদি সব নাগরিক নিজেদের কাজ সম্পর্কে বুঝতে পারে। জার্মানিতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৩২৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজার ৯৬০ জন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ২৮ জন।

রাশিয়ায় প্রথম মৃত্যু : বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসে রাশিয়ায় প্রথম একজনের মৃত্যু হয়েছে। রুশ সরকার জানায়, দেশটির ৭৯ বছরের এক প্রবীণ নারী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। বৃহস্পতিবার মস্কোর একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। রাশিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৭ জন।

রাশিয়ার করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিতে নিয়োজিত কেন্দ্র জানায়, আক্রান্ত নারী ১৩ মার্চ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু একদিন তার স্বজনদের অনুরোধে একটি বেসরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরে তার দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ার পর সংক্রামক রোগের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। আক্রান্ত নারী ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ কয়েকটি রোগে ভুগছিলেন। করোনার বিস্তার ঠেকাতে রুশ সরকার বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থগিত ও কর্মক্ষেত্রে সংক্রমণ রোধের পদক্ষেপ।

দিল্লিতে আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা : একজন সন্দেহভাজন করোনাভাইরাস রোগী ভারতের রাজধানী দিল্লির একটি হাসপাতালের আট তলার আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন।

বুধবার স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে ওই রোগীকে ভর্তি করা হয়েছিল। ৩৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে ভারতে ফিরেছিলেন।

মাথাব্যথা করছে জানানোর পর তাকে হাসপাতালে পাঠায় দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে আনার পর তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়েছিল।

তার শরীর থেকে নমুনা নিয়ে সেগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষার প্রতিবেদন আসার আগেই তিনি ওয়ার্ডের জানালা দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। গত এক বছর ধরে তিনি সিডনিতে ছিলেন বলে জানা গেছে।

কর্মীদের বোনাস ঘোষণা ফেসবুকের : করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বড় সংকটে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বহু জায়গায় কারখানা-অফিস বন্ধ করে দিতে হয়েছে বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে। এর মধ্যে রয়েছে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকও।

করোনা সংক্রমণের কারণে ইতিমধ্যে চীন-লন্ডনের অফিস বন্ধ করে দিয়েছে তারা। কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করারও সুযোগ দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

এবার করোনা সংকটের মধ্যেই কর্মীদের জন্য বোনাস ঘোষণা করেছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ। মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ এক স্মারকে এ অর্থ প্রদানের কথা জানান তিনি।

লাইটনিউজ/এসআই

শেয়ার করুন:

আরো সংবাদ
© All rights reserved © janashokti

Developer Design Host BD